অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রেমিট্যান্স

446

রায়হান আহমেদ তপাদার:

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর যুগান্তকারী অগ্রগতি দেখেছে দেশের অর্থনীতি।অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচক গুলোতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে পেছনে ফেলে সামনের সারিতে বাংলাদেশ। বিশ্বের অনেক স্বল্পোন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ হিসেবে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশকে।মহামারি করোনা ভাইরাসের আঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামায় টালমাটাল বৈশ্বিক অর্থনীতি। যার করুণ ভুক্তভোগী দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের দেশগুলো। যুদ্ধের কারণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতেও।মন্দার হুমকিতে আছে তারা।তবে এর মধ্যে স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এই অর্থনৈতিক ভারসাম্যের পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে দেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। এসব খাতকে আরো এগিয়ে নিতে সময়ের সঙ্গে মিল রেখে বিজ্ঞান ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের পাঠানো এ অর্থ দেশের আর্থসামাজিক বিকাশে অন্যতম অনুঘটক হিসেবে বিবেচিত। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা নিয়ে আলোচনাটা তাই অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয়। যদিও দেশীয় শ্রমবাজারে শ্রমশক্তির চাহিদা ও জোগানের সমন্বয়হীনতার কারণে প্রবাসের শ্রমবাজার আমাদের শ্রমশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রস্থল হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে একদিকে যেমন প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স সামষ্টিক অর্থনীতির ভিতকে শক্তিশালী করছে, তাদের পাঠানো অর্থ দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিশুর পুষ্টি ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ প্রবাসী কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি রয়েছে সৌদি আরবে। সেখানে তাদের সংখ্যা প্রায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান, জর্ডান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা কাজ করছেন। তবে মানতেই হয়, তাদের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক থেকে অদক্ষ ও স্বল্পশিক্ষিত শ্রমিকের সংখ্যাই অনেক বেশি। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল দুই কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা ২০০০ সালে বেড়ে পৌঁছে ১৯৫ কোটি ডলারে। বর্তমানে তা ২৪৭৮ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। জিডিপি’তে রেমিট্যান্সের অবদান ছয় শতাংশেরও বেশি। ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সংকটমুক্ত করতে ভূমিকা রেখেছিল রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্সের কারণে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও অনেক বেড়েছে। জীবন মান উন্নয়নের জন্য এবং আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেক লোক বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন এবং উদয়াস্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করে বৈদেশিক রিজার্ভকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন তাদের অধিকাংশই অদক্ষ শ্রমিক। এসব বিদেশগামী শ্রমিককে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে বিদেশে পাঠানো হলে তারা আরো ভালো বেতনে চাকরি লাভের সুযোগ পাবেন। দেশও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। প্রতিবেশী ভারত বিশ্বের প্রধান রেমিট্যান্স আয়কারী দেশ। এরপরই রয়েছে চীন। এসব দেশ প্রশিক্ষিত ও দক্ষ লোকজনকে বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে অবস্থান করছে।বিদেশগামীদের অধিকাংশই অদক্ষ হওয়ার কারণে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা হাড়ভাঙ্গা খাটনি খেটেও ন্যায্য বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্র তৈরি করলে বাংলাদেশের অর্থনীতির কর্মকান্ডকে গতিশীলতার সঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে চাইছে, তাতে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। প্রবাসীদের জন্য যত বেশি সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে তত বেশি রেমিট্যান্স আসবে দেশে। আর বেশি রেমিট্যান্স প্রবাহ সচল থাকলে দেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি ঘটবে। বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রবাসীদের উপার্জিত অর্থ দেশে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো একটি সমস্যার সম্মুখীন। আর এটি হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ। বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকরা অনানুষ্ঠানিক এ চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমরা জানি, আন্তর্জাতিক বা জাতীয় বৈদেশিক মুদ্রা স্থানান্তর কাঠামোর বাইরে সম্পদের অবৈধ স্থানান্তরকে হুন্ডি বোঝায়। লন্ডন, নিউইয়র্ক, দুবাই, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুরের মতো বিভিন্ন শহরে সংগঠিত গোষ্ঠী বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য অঞ্চলে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করে। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট (জিইপি)-২০০৬-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের ৫৬ শতাংশই আসে অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে। তবে পরবর্তী সময়ে গ্রামীণ এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে বা বলা যায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। রেমিট্যান্স স্থানান্তরের জন্য আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধি হলেও সমস্যাটি কিন্তু এখনো রয়ে গেছে। তাছাড়া ভারতে আমাদের আস্থায়ী শ্রমিকদের অভিবাসনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চিহ্নিত করা হয়নি। এখানে যেমন রাজনৈতিক ইস্যু রয়েছে, তেমনি পাশাপাশি দেশ হওয়ার কারণে অনেকেই অবৈধ পথে সীমান্ত দিয়ে আসা-যাওয়া করে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এ ধরনের অভিবাসীদের কাছ থেকে প্রেরিত অর্থ সম্ভবত অনানুষ্ঠানিক পথ অনুসরণ করে এবং রেমিট্যান্স হিসাবের বাইরেই থাকে। এটা শুধু হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রদানকে গতিশীল করছে না, বরং বাণিজ্যের জন্য অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে সীমান্ত পাচার ও চোরা চালানকেও উৎসাহিত করছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দারিদ্র্য ও আর্থিক উন্নয়নে রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। প্রবাসী শ্রমিকদের বেশির ভাগই নিজে দেশে কর্মসংস্থানহীন অবস্থায় দিন কাটিয়েছে, প্রবাসে তারা চাকরি করছে। তবে এটি কিন্তু স্বদেশে অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগকে সীমিত করতে পারে বা কম সুযোগ তৈরি হতে পারে। বিপরীতে তাদের প্রেরিত রেমিট্যান্স নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়তাও করতে পারে। তবে এটি তখনই ঘটে, যখন রেমিট্যান্সের মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয়, পুঁজি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়। তাই আমরা বলতে পারি, উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নে রেমিট্যান্স পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ উভয়ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা ক্রমেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তুলতে রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে সাম্প্রতিক সময়ে এ অবদান আরো বেড়েছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) বলছে, ২০৩২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের বড় ২৫টি অর্থনীতির দেশের একটি হবে। শুধু যে শহরেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে তা-ই নয়। বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিও এখন বেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে।সচ্ছলতা ফিরেছে গ্রামের মানুষের, বিদেশ থেকে আসা অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্মচাঞ্চল্য ও গতিশীলতা সৃষ্টিতে প্রবাসী আয় বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। মানুষের জীবনমান আর গ্রামগুলোর বদলে যাওয়ার নেপথ্যে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বা প্রবাসী আয়ের বড় ধরনের অনুঘটক।এটাও স্বীকার করতে হবে যে বিশ্ব দ্রুত পাল্টাচ্ছে। বাজারে নতুন নতুন চাহিদা তৈরি হচ্ছে। কভিড-১৯ পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতিকে নতুন এক পরীক্ষার সম্মুখীন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতার নতুন পরীক্ষাদিতে হচ্ছে সবাইকে।সরকার ও নীতিনির্দেশকদের এখন তাই আরো দূরদর্শী হতে হবে, আরো দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে উন্নতি লাভ করছে। দেশের জি.ডিপি বৃদ্ধির ফলে মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং জীবযাত্রার মান পূর্বের তুলনায় উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ এবং রেমিটেন্সের বৃদ্ধি। বিভিন্ন তথ্য এবং উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সৌদিআরব, ওমান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এবং মালোয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রবাসিগনের অধিকাংশই অদক্ষ শ্রমিক শ্রেণির। তাদের কষ্টার্জিত অর্থ প্রধানত খরচ হচ্ছে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহে। তাদের প্রেরিত অর্থে আমাদের গ্রামীন অর্থনীতি বিকাশ লাভ করছে। বিলাসী পন্য ব্যবহারের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাড়ছে জীবনযাত্রার মান। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশী প্রবাসী রয়েছেন।দেশে বৃহৎ বিনিয়োগ করতে আর্থিক ভাবে সক্ষম এমন প্রবাসিগন এ দেশ সমূহে বাসবাস করেন। ইংল্যান্ড, আমেরিকা ইত্যাদি দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীগন যারা দীর্ঘদিন ধরে সেসব দেশে অবস্থান করছেন তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশে থাকা তাদের সম্পত্তিসমূহ ইতিমধ্যেই বিক্রি করে ফেলেছেন অথবা বিক্রয়ের আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এর ফলে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ক্রামান্বয়ে হ্রাস পাবে এবং এতে দেশে প্রাপ্ত রেমিটেন্স হ্রাস পেতে পারে। বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডে অবস্থানরত ধর্নাট্য শ্রেনির ব্যক্তিগণকে দেশে বিনোয়োগে আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধিকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধিকারী বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা উচিৎ। দেশে অবস্থানরত সম্ভাব্য সক্ষম উদ্যেক্তাগণ বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহন করে প্রবাসীদেরকে বিনোয়োগে আগ্রহী করা একান্ত প্রয়োজন। এতে দেশের সাথে প্রবাসীদের এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। প্রবাসীদের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চন্তে করা প্রয়োজন। অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় সংকোচন করা দরকার। প্রবাসীদর সম্পদ রক্ষণা বেক্ষণ ও তদারকি সংক্রান্ত সমস্যা, বিশ্বস্ত ব্যক্তির অভাব এবং ব্যবসায়িক ঝুঁকি গ্রহনের অনিহা একটি বড় সমস্যা। প্রবাসীদর বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগের খাতসমূহ সনাক্ত করা প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্মের অনেক প্রবাসি দেশে আসতে চাইলে অনেক ক্ষেত্রে অত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত জনের কাছ থেকে তেমন আগ্রহ দেখতে সক্ষম হন না।তাই ব্যাপারেও নীতিগত চিন্তার প্রয়োজন আছে। তাছাড়া জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হলো যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের টাকার অভাব। এ সমস্যা দূরীকরণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকার একটি সমন্বিত পরিকল্পনা ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। যে নীতিমালায় প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী হবে বলে অভিমত অনেক বিশেষজ্ঞদের। শুধু অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোই নয়, অধিক আয়ের উপযুক্ত কর্মী তৈরি করে অধিক আয়ের উন্নত দেশগুলোতে সেসব কর্মী প্রেরণের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অবশ্যই সংখ্যার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অধিক আয়ের গন্তব্য। লেখক:গবেষক ও কলাম লেখক raihan567@yahoo.com