বিদায়ী ২০২২ সালে নানা কারণে আলোচনায় ছিল যশোর শিক্ষা বোর্ড

210

ইয়ানূর রহমান : বিদায়ী ২০২২ সালে নানা কারণে আলোচনায় ছিল যশোর শিক্ষা
বোর্ড। মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলা, উচ্চ মাধ্যমিক
পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের উস্কানীমূলক প্রশ্ন প্রণয়ন ও
প্রশ্নপত্রে ভুলের বিষয়টি ছিল বোর্ডের আলোচিত হওয়ার কারণ।

এ কারণে যশোর শিক্ষা বোর্ড নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি তাদের পরীক্ষা
সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মানুষের মাঝে। ২০২২ সাল
জুড়ে এটি ছিল মানুষের মাঝে আলোচনার বিষয়। ফলে নতুন করে প্রশ্ন ছাপিয়ে
আনতে হয়। যদিও বোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটরদের অব্যাহতি
দিয়ে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা চালায়। আরেকটি আলোচিত ঘটনা হচ্ছে শিক্ষক
দিবসের র‌্যালি। যেটি শিক্ষকদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসির বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই
পরীক্ষায় নড়াইলের তিনটি কেন্দ্রে বাংলা ২য় পত্রের এমসিকিউয়ের ভুল প্রশ্ন
বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন পাওয়ার পর এটি ধরা পড়ে। নড়াইলের
কালিয়া প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বাঐসোনা কামশিয়া
মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ভুল
প্রশ্নপত্র সরবরাহের এই ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এরপর যশোর শিক্ষা বোর্ড বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা স্থগিত করে। পরবর্তীতে ৩০
সেপ্টেম্বর পরীক্ষা পুনরায় গ্রহণ করা হয়। এজন্য নতুন করে বিজিপ্রেস থেকে
প্রশ্ন ছাপিয়ে আনা হয়। এ ঘটনা তদন্তে জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর বোর্ডের
বিদ্যালয় পরিদর্শক সহযোগী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম ও যশোর সরকারি মাইকেল
মধুসূদন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এমআর জাকারিয়াকে দায়িত্ব দিয়ে দুই সদস্যের
তদন্ত কমিটি গঠন হয়। প্রশ্ন না দেখে বিতরণ করার জন্য তিন কেন্দ্র সচিবকে
দায়ী করে তদন্ত কমিটি। তারা নিজেরা ঠিকভাবে প্রশ্ন না দেখে বিতরণ করায়
দায়িত্ব অবহেলার জন্য দোষী প্রমাণীত হওয়া কেন্দ্র সচিবদের পরীক্ষার
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় যশোর শিক্ষা বোর্ড।

এ ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই গত ৬ নভেম্বর ঢাকা বোর্ডের এইচএসসি’র
বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানির’ অভিযোগ ওঠে। এই
ঘটনায় ও জড়িত ছিল যশোর শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটররা।
প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক উস্কানির’ সাথে জড়িত প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী
ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক
প্রশান্ত কুমার পাল, প্রশ্নপত্রের মডারেটর নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া
কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা
কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের
সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের
সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম।

বোর্ড থেকে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন, অভিযুক্তদের বোর্ডে তলব ও সর্বশেষে
তাদের পরীক্ষা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তারপর ১৭ নভেম্বর একই
পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে ভুল ধরা পড়ে।
তাতে একই প্রশ্ন মডারেটর জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণীত হয়। শুধু প্রশ্ন
প্রণয়নকারী ছিলেন দৌতপুর মহিষাকুন্ডু কলেজের সহকারী অধ্যাপক রুবিনা
পারভীন।

তাবে আলোচিত ঘটনা ছিল জাতীয় শিক্ষক দিবসের র‌্যালি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
নির্দেশে যশোরের শিক্ষকরা ২৭ অক্টোবর বনার্ঢ্য আয়োজনে র‌্যালি করে।
র‌্যালিটি যশোরের সকল শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
প্রফেসর ড. আহসান হাবীব জানান এটাই ছিল সুন্দর ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে শিক্ষক
দিবসের প্রথম র‌্যালি। এমন অনুষ্ঠানে যশোর শিক্ষক দিবস উদ্যাপন করা
হয়নি।