ফকিরহাটে এক সপ্তাহে ৪টি ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

132

সুমন কর্মকার, ফকিরহাট (বাগেরহাট) : বাগেরহাটে ফকিরহাট উপজেলায় পৃথক স্থান থেকে এক সপ্তাহে চার জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সর্বশেষ গত রবিবার (০১ জানুয়ারি) ফকিরহাট উপজেলার মৌভোগ ঠিকরিপাড়ায় এলাকার একটি ভাড়া বাড়ির ঘর থেকে মো. ইয়াছিন (২০) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত ইয়াছিন অভয়নগন থানার সোনাখালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) শেখ নাছিম উদ্দিনের ছেলে। সে ফকিহাটের সাকিনা আজহার টেকনিক্যাল কলেজের দশম শেণির ছাত্র।
মৌভোগ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) কনক মন্ডল বলেন, এসআই শেখ নাছিম উদ্দিন দীর্ঘদিন ফকিরহাট মডেল থানায় কর্মরত থাকার সুবাদে তার পরিবার ঠিকরিপাড়া একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে আসছে। মো. ইয়াছিন শনিবার রাতের কোন এক সময় ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের দাবী সে আত্মহত্যা করেছে, তবে কি কারনে আত্মহত্যা করেছে সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।

এছাড়া উপজেলার টাউন-নওয়াপাড়ার সেকেরডাঙ্গা এলাকা থেকে গত শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধায় ঘরের বারান্দার আড়ার সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় সানজিদা খাতুন (০৮) নামের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে মডেল থানা পুলিশ। মৃত সানজিদা খাতুন সেকেরডাঙ্গা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি শরিফুল ইসলাম মোড়লের কন্যা। সে সেকেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের দাবী সে আত্মহত্যা করেছে।

অপরদিকে, গত মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) উপজেলার ছোট খাজুরা এলাকা থেকে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় জাহাঙ্গীর মোড়ল (৪৫) নামের এক পোল্ট্রি মুরগী ফার্মের মালিকের লাশ উদ্ধার করেছে ফকিরহাট মডেল থানা পুলিশ। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের দাবী সে আত্মহত্যা করেছে। তবে ঠিক কি কারনে আত্মহত্যা করেছে সে ব্যাপারে কিছু জানা না গেলেও তার পরিবার জানান, ব্যাবসায় ক্ষতির কারনে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।

এছাড়াও উপজেলার মৌভোগ মধ্যপাড়া এলাকা থেকে গত সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো আবু হানিফ শেখ (২২) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে মডেল থানা পুলিশ। মৃত আবু হানিফ মৌভোগ মধ্যপাড়া গ্রামের গোলদার শেখের ছেলে। তার পরিবারেরও দাবি হানিফ আত্মহত্যা করেছেন।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আলীমুজ্জামান বলেন, এ সব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সুরোতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের জন্য সানজিদা খাতুন (০৮), আবু হানিফ শেখ (২২) নামের দুজনের লাশ বাগেরহাট সদর হাসাপাতের মর্গে পাঠানোর হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে প্রত্যেকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের কারোর শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভভাবে ধারনা করা হচ্ছে সবাই আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারন সঠিকভাবে জানা যাবে।