পূর্ব ও পশ্চিমের সংঘাত বিশ্বনেতৃত্ব বদলের ইঙ্গিত

194
রায়হান আহমেদ তপাদার:

গত দুই বছরে মার্কিন-চীন সম্পর্কের দ্রুত অবনতির প্রাথমিক কারণ ভূ-রাজনৈতিক হলেও, দু'দেশের বাণিজ্য সংঘাতকেও সামনে আনছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চড়া শুল্কারোপের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, কৌশলগত প্রতিদ্বন্দী হিসেবে চীনকে দূর্বল করে দেওয়া। এথেন্সের ঐতিহাসিক দার্শনিক থুকিডাইডিস তার বিখ্যাত বই হিস্ট্রি অব পেলোপনেশিয়ান ওয়ার বইতে ক্ষমতার ভারসাম্য ও পরাশক্তির মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন, যা আধুনিক কালেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অন্তত চীন-মার্কিন বা রাশিয়া-মার্কিন দ্বন্দ্ব থেকে তাই প্রমাণিত হচ্ছে।
১৯৪৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপে যত সংঘাত হয়েছে, তার মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ সবচেয়ে বিধ্বংসী সংঘাত। পশ্চিমের অনেকেই যখন এ যুদ্ধকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ হিসেবে দেখছেন, তখন পুতিন বলেছেন, ২০০৮ সালে ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্য বানানোর বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটি রাশিয়ার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছিল; সে কারণে রাশিয়া এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। অন্য অনেকে মনে করেন,শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পশ্চিমারা রাশিয়াকে যথার্থ সমর্থন ও সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হওয়াও আজকের অবস্থার পেছনের একটি বড় কারণ। কিন্তু আগামী কয়েক বছর লড়াই চলবে এমন আশঙ্কায় ছেয়ে যাওয়া এ যুদ্ধের উৎপত্তির আসল অনুঘটক কী, তা কি আমরা বুঝতে পারছি? প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এক শতাব্দী আগে সংঘটিত হয়েছিল। ইতিহাসবিদেরা এখনো সেই যুদ্ধ কী কারণে ঘটেছিল, তা নিয়ে বই লেখেন। ১৯১৪ সালে একজন সার্বিয়ান সন্ত্রাসী একজন অস্ট্রিয়ান আর্চডিউককে হত্যা করাতেই কি এ যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটেছিল? নাকি শক্তিধর জার্মানি ব্রিটেনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য এটি ঘটেছিল? নাকি ইউরোপজুড়ে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদের সঙ্গে এর সম্পর্ক ছিল? 

উত্তর হলো, ওপরের সব কটি কারণ ঠিক, সঙ্গে আরও কারণ আছে। কিন্তু ১৯১৪ সালের আগস্টে আসল যুদ্ধ শুরু না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠেনি। এ শতকের মাঝামাঝি গিয়ে চীন ও ভারত প্রায় কাছাকাছি অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে। জানা ইতিহাসের বেশির ভাগ সময়জুড়েই চীন ও ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ছিল। উনিশ শতকের শেষভাগে এসেই কেবল যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে পারে। এশিয়ার দুই পরাশক্তির এই পুনর্জন্ম ইতিহাসের প্রথা মেনেই ঘটছে। সব বাধা অতিক্রম করে চীন তার দলবদ্ধ পুঁজিবাদের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে বড় অর্থনীতিতে পরিণত হতে চলেছে। ভারতও কাছাকাছি অবস্থান করবে। এর কারণ হলো, খুব দ্রুত দলবদ্ধ পুঁজিবাদ নিজেদের মতো আয়ত্ত করে নিয়ে শিল্পায়নের বিকাশ ঘটিয়েছে ভারত। এ শতাব্দীর প্রথম দুই দশকে ভারতের প্রবৃদ্ধি চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চীনকে লক্ষ্যবস্তু বানানোয় পশ্চিমা বিশ্ব এখন ভারতকে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছে না। বাস্তবতা হলো, ভারতই একমাত্র দেশ, যেটি বিশ্বে চীনের প্রভাবের ওপর ভারসাম্য আনতে পারে। পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠতে পারে ভারত। যেকোনো বিবেচনাতেই একুশ শতকের অপরিহার্য একটি দেশ ভারত। বিশ শতকে এসে শ্রমজীবীরা তাঁদের অধিকারের আওয়াজ তোলেন। এই প্রেক্ষাপটে অভিজাতেরা শ্রমিক সংস্থা ও আমলাতন্ত্র গঠন করেন। তাঁরা বণিক শ্রেণির কাছে আরও ন্যায্যতা দাবি করেন এবং এর অনেকটা আদায় করতেও সামর্থ্য হন। কিন্তু বণিক গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা তারা ভেঙে দিতে পারেননি। তায়বের মডেল অনুসারে, পশ্চিমারা রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে এখন যে সংঘাতে লিপ্ত, সেটা বণিক আর্কেটাইপের মানুষের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টার অংশ। এ কারণেই পূর্ব এশিয়া পশ্চিমাদের সহজাত প্রতিপক্ষ। জাপান ও কোরিয়ার মতো চীন শ্রমজীবী আর্কেটাইপের একটি দেশ। বণিক সম্প্রদায় তাদের বিশ্বায়ন ধারণা বিকশিত করলে তা থেকে চীন বড় সাফল্য অর্জন করতে পারে। 

কিন্তু দেশটির সরকার দেশি-বিদেশি বণিক গোষ্ঠীর লাগাম টেনে রাখে। চীন সরকার বণিক গোষ্ঠীকে যেমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, অন্য দেশে তেমনটা দেখা যায় না। ১৯৯২ সালে ফ্রান্সিস ফুকোয়ামার বহুল প্রচলিত ইতিহাসের যবনিকাপাত? প্রথম প্রকাশিত হয়। ফুকোয়ামার যুক্তি হলো, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে পড়ার অর্থ হলো, কর্তৃত্ববাদের ওপর উদার গণতন্ত্রের বিজয় এবং ইতিহাসের (মতাদর্শিক) যবনিকাপাত। বাকি বিশ্বের সামনে অনিবার্যভাবেই একটি পথ খোলা, সেটি হলো পশ্চিমা উদার গণতন্ত্র। ১৯৯০-এর দশকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে ফুকোয়ামার এই যুক্তির একটি অর্থ দাঁড়ায়। কিন্তু পরবর্তী দশকগুলোতেও পশ্চিমারা যেভাবে সেই একই যুক্তি ধরে রেখেছে, তা বিস্ময়ের ব্যাপার বৈকি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, উদারনৈতিক ব্যবস্থাকে পশ্চিমারা নিজেরাই ছিন্নভিন্ন করছে। ন্যাটোকে রাশিয়ার সীমান্তের গোড়ায় নিয়ে গিয়ে, ইসলামি বিশ্বের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে এবং এক চীন নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের সংহতি বিনষ্ট করেছে। এককভাবে অর্থনীতির দিকটা বিবেচনা করলেও দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমা বিশ্বের রাজনৈতিক হর্তাকর্তারা ভুল পথে যাত্রা শুরু করেছেন। খাদ্য ও ভোগ্যপণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম বড় উৎপাদক দেশ। আর শিল্পপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষে চীন। সবচেয়ে বড় ঋণদাতা দেশও তারা। রাশিয়াকে বর্জন আর চীনকে প্রধান প্রতিপক্ষ বানানোর পশ্চিমাদের এই নীতিতে লাভবান হচ্ছেন গুটিকয়, এর বেশির ভাগই অস্ত্র উৎপাদক। উদার গণতান্ত্রিকব্যবস্থা বিকাশের বদলে পশ্চিমা বিশ্ব বরং বিপরীতটাই অর্জন করেছে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ বিশ্বে রাশিয়ার অবস্থান শক্তিশালী করছে। রাশিয়ার সস্তা জ্বালানির প্রবাহ চীন ও ভারতের দিকে চলে যাচ্ছে। আর জ্বালানি উৎপাদক দেশগুলোর কাছে পেট্রো-ডলারের পাশাপাশি পেট্রো-ইউয়ানও বিনিময়ের মাধ্যম হয়ে উঠল।

এই সবকিছুই ইউরোপে আংশিক বি-শিল্পায়ন ঘটাচ্ছে; সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কথা নাইবা বললাম। ২৫ বছর আগেও এসব ঘটনা একেবারেই অকল্পনীয় ছিল। দ্য স্পিরিচুয়াল ইম্পারেটিভ গ্রন্থের লেখক লরেন্স তায়ব দাবি করেছিলেন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সংঘাত কেন চলে, সেটি ব্যাখ্যা করার একটি সাংস্কৃতিক সূত্র তিনি খুঁজে পেয়েছেন। ভারতীয় বর্ণধারণার ওপর ভিত্তি করে তায়ব ইতিহাসের একটি বিশদ পাঠ নির্মাণ করেন। প্রাচীন বেদে বর্ণিত শ্লোকের ওপর ভিত্তি করেই ভারতীয় সমাজে পরবর্তী কালে বর্ণপ্রথার উদ্ভব হয়। পৃথক বিশ্বদৃষ্টি, সামাজিক আদর্শ ও গুণাবলির ওপর ভিত্তি করে বর্ণধারণা মানুষের চার ধরনের আর্কেটাইপ বা আদি বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছে। বৈশ্য বা বণিক আর্কেটাইপের মানুষের দক্ষতা, সাংগঠনিক যোগ্যতা ও উদ্ভাবনী গুণ থাকলেও তাঁরা মুনাফাকে মানুষের চেয়ে বড় করে দেখেন। শূদ্র বা শ্রমিক আর্কেটাইপের মানুষেরা দলগত কাজ ও সংহতির ক্ষেত্রে ভালো হলেও তাঁরা প্রথার প্রতি অনুগত আর উদ্যোগ নিতেও উৎসাহী নন। ইতিহাস পর্যালোচনা করে তায়ব জানান, পশ্চিমা সমাজে সতেরো থেকে বিশ শতক পর্যন্ত বণিক আর্কেটাইপের মানুষেরা প্রভাব বিস্তার করেন। ফলে সেখানে বাণিজ্য ও শিল্পের ব্যাপক বিস্তার হয়। বণিক আর্কেটাইপের অভিজাত গোষ্ঠী হলো শীর্ষ পুঁজিপতি, বিনিয়োগকারী ও শিল্পপতি। পুতিন তাঁর রাশিয়ান বিশ্ব পুনরুদ্ধার করতে চাইলেন এবং ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসলেন। এসবের পেছনে গভীর কারণ ছিল শীতল যুদ্ধের পরবর্তী অবস্থা। শীতল যুদ্ধের অবসানের প্রাথমিক পর্যায়ে রাশিয়া এবং পশ্চিম উভয়ই আশা করেছিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন রাশিয়ায় গণতন্ত্রের উত্থান ঘটাবে এবং সেখানে একটি বাজার অর্থনীতির জন্য অনুমতি পাওয়া যাবে। প্রারম্ভিক বছরগুলোতে, ক্লিনটন এবং ইয়েলৎসিন সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েও ছিলেন। 

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যখন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়েগর গাইদারের সরকারকে ঋণ ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিল, তখন রাশিয়ানরা বলল, তারা আরও অনেক কিছু আশা করেছিল। একটা বঞ্চনার বোধ রাশিয়ার মানুষকে ক্ষুব্ধ করল। সেই বোধকে কাজে লাগিয়ে পুতিন জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠলেন এবং পশ্চিমাবিরোধী ভাবমূর্তি গড়ে তুললেন। তার একটা পরিণতি হিসেবেও এই যুদ্ধকে দেখা যেতে পারে। তবে এর কোনোটিকেই ইউক্রেন যুদ্ধ অনিবার্য করে তোলা কারণ হিসেবে দেখা যাবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমানভাবে সম্ভাব্য হয়ে উঠেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিন ভুল হিসাব–নিকাশ করে তাঁর দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়েছেন। সেই জ্বলন্ত ম্যাচ–কাঠিটি খুব সহজে নেভানো যাবে বলে মনে হচ্ছে না।বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধ যেমন তুঙ্গে উঠেছিল; ঠিক তেমনি চীনও এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব বর্তমানে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় নির্ণায়ক উপাদান। অনেকের আশঙ্কা,চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হতে পারে। তবে মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধের সঙ্গে এই স্নায়ুযুদ্ধের একটি বড় তফাত হলো, আমেরিকা ও চীনের অর্থনীতি একে-অন্যের সঙ্গে বেশ গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। ফলে এই দ্বন্দ্ব নতুন এক মাত্রা পেয়েছে। এ যুদ্ধ বরং রূপ নিতে পারে প্রযুক্তিগত কর্তৃত্ব বিস্তারের যুদ্ধে। হুয়াওয়েকে নিয়ে দ্বন্দ্ব তারই ইঙ্গিত বহন করে। এছাড়াও এটাও তো অনস্বীকার্য, ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত বিষয়ে প্রাধান্য বিস্তার করতে চলেছে চীনই।  আর প্রযুক্তিগত উন্নতির ওপরই নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ সভ্যতা। অপরদিকে, অর্থনৈতিক শক্তি বা পাওয়ার এমন বড় এক নিয়ামক যার জন্য দুই দেশের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে। কারণ যুদ্ধ মেশিন চালাতে বা প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে দরকার টাকা-পয়সার। আবার অর্থনৈতিক আগ্রাসন একটা সময় গিয়ে সামরিক আগ্রাসনের দিকে পরিণত হয়।

চীন-মার্কিনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা আলাদা নয়। বিশেষ করে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতির সুবিধা নিয়ে ব্যাপক আয় করে নিয়েছে এবং সেই আয় করা অর্থই দেশটিকে সরাসরি মার্কিনিদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সাহায্য করছে এখন। মার্কিনিদের হুমকি ধামকিকে কোন কর্ণপাত না করে সেখানে প্রতিনিয়ত সামরিকীকরণ করে যাচ্ছে দেশটি। স্বাভাবিকভাবেই চীনের এমন কর্মকাণ্ডে নাখোশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রও বারবার বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তবে শি জি পিং এর আজীবনের জন্য ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়াটা মার্কিনিদের জন্য গভীর ভাবনার কারণ। বিশ্বযুদ্ধের মত বাণিজ্য সংঘাতে কোন জয়-পরাজয় হয়তো নাই, তবু দুই পক্ষই তাদের কর্তৃত্ব বা পরাশক্তির তকমা  ধরে রাখার জন্য হলেও এই সংঘাতের ঝুঁকি নিয়েছে এবং তা আপাতত থামবার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এখন শুধু অপেক্ষার পালা এটা দেখার জন্য যে, থুকিডাইডিসের তত্ত্ব সত্য প্রমাণিত হবে নাকি দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধ নতুন মাত্রা নিয়ে রূপ নেবে প্রযুক্তিগত কর্তৃত্ব বিস্তারের যুদ্ধে।  

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট