ইরান-রাশিয়া উষ্ণ সম্পর্ক কী বার্তা বহন করছে

142
রায়হান আহমেদ তপাদার:
 
ইউক্রেন যুদ্ধ একটি দেশের পররাষ্ট্র নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থ অর্জনে সহায়তা করছে। সেই দেশটা রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন নয়। সেই দেশটা হলো ইরান। কখনো কখনো কোনো একটি সংবাদ ঘূর্ণিপাকের মতো হয়ে গোলমালের চেয়ে বেশি কিছু তৈরি করে বসে। দিগন্তের ওপারে কী থাকতে পারে, সে বিষয়ে ভালোভাবে না জেনেই সংবাদের সেই ঘূর্ণাবর্ত উচ্চ নিনাদে অদ্ভুত সব সংকেত দিতে থাকে। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ২০২২-এর তথ্যমতে, বিশ্বে সামরিক অস্ত্রের সক্ষমতার দিক থেকে ইরানের অবস্থান ১৪তম। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে অস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তি কেনার পথ খানিকটা কঠিন হয়ে যায় ইরানের। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পর তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে ইরান নিজেই নানা ধরনের অস্ত্র, অস্ত্রের উপকরণ তৈরি ও নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দেশটি বেশ সফলও হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি, ড্রোন তৈরি ও পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে এগিয়েছে তেহরান। ইরানের শক্তির মূল স্তম্ভ হলো নানা ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র। বিমান হামলা চালানোর সক্ষমতা কম হওয়ায়, পরিকল্পিতভাবেই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে দেশটি। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার প্রতি সমব্যথী দেশের সংখ্যা কমতে কমতে এখন হাতে গোনা কয়েকটিতে এসে ঠেকেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক সব সময়ই জটিল। সিরিয়ার ক্ষেত্রে ইরান ও রাশিয়া দুই দেশই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার–আল আসাদকে সহায়তা করে আসছে, যদিও তাদের জাতীয় স্বার্থ পুরোপুরি ভিন্ন। মধ্যপ্রাচ্যে প্রধান শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য রাশিয়া আসাদ সরকারকে সহায়তা করছে। অন্যদিকে ইরানের জন্য বন্ধুভাবাপন্ন সিরিয়া মানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী জোট শক্তিশালী হওয়া।  এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া পুনর্গঠন ও অবকাঠামো উন্নয়নের লাভজনক কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে ইরান ও সিরিয়ার মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে। নিজেদের পক্ষে যায়, এমন একটা পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টা দুই দেশই অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কোনো দেশই সিরিয়া সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মতো প্রভাব তৈরি করতে পারেনি। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার বিপর্যয় ভ্লাদিমির পুতিনকে বাধ্য করেছে ইরানের শরণাপন্ন হতে। তেহরান মস্কোকে দুইভাবে সহায়তা করছে। প্রথমত, ইউক্রেন যুদ্ধে সেনাসংকটে পড়েছে রাশিয়া। সে কারণে সিরিয়ায় মোতায়েন করা সেনাদের সরিয়ে ইউক্রেনে মোতায়েন করছে রাশিয়া। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সেনারা শূন্যস্থান পূরণ করে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে। দ্বিতীয়ত, ইরান থেকে রাশিয়া সস্তায় ও অত্যন্ত কার্যকর ড্রোন নিচ্ছে। প্রতিপক্ষ  ইউক্রেনকে পশ্চিমারা অগ্রসর প্রযুক্তির ড্রোন দিচ্ছে। ইরানের ড্রোন রাশিয়ার যুদ্ধ করার সামর্থ্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলোর নিরাপত্তা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছে, ইরান থেকে রাশিয়া শিগগিরই স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পেতে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধ ইরানের স্বার্থ বিকশিত করার সুযোগ করে দিয়েছে। ইরান-রাশিয়ার মধ্যকার বর্তমান উষ্ণতম সম্পর্ক ইউক্রেনকে পরাজিত করতে মস্কোকে খুব বেশি সহায়তা করতে পারবে না। কিন্তু এই সম্পর্ক ইরানের জাতীয় স্বার্থসিদ্ধিতে অনেকটাই সহায়তা করবে। প্রথমত, সিরিয়া থেকে রাশিয়া সেনা সরিয়ে নেওয়ায় দেশটিতে এখন ইরানের প্রভাব অনেক বাড়বে। আসাদবিরোধী বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ইরানি বাহিনী সিরিয়ার বড় একটা অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে ইরান এমন একটা মুক্ত করিডর তৈরি করতে সক্ষম হবে, যেটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর অভয়ারণ্য হবে। রাশিয়ার অস্ত্রের চাহিদা ইরানের অস্ত্রশিল্প বিকাশের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে।  এ পর্যন্ত ইরান বড় কোনো দেশে অস্ত্র বিক্রি করতে পারেনি। রাশিয়া সেই সম্ভাবনা তৈরি করেছে। রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে অনেক বিষয়ে মতৈক্য না থাকলেও পশ্চিমারা একঘরে করে দেওয়ার পর দেশ দুটি নিষেধাজ্ঞার অক্ষ হিসেবে একসঙ্গে চলছে। এ উদ্দেশ্যে ৭ হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর বা আইএনএসটিসি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাইছে তারা। আইএনএসটিসি হলো ভারত, ইরান, আজারবাইজান, রাশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ইউরোপকে রেল ও সমুদ্রপথে একসূত্রে বেঁধে ফেলার প্রকল্প। ২০০০ সাল থেকে প্রকল্পটি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হলেও সেটি কখনো বাস্তব রূপ পায়নি। পশ্চিমাদের কাছে একঘরে হয়ে পড়ার পর ইরান ও রাশিয়া আইএনএসটিসি প্রকল্পটি পুনর্জীবনের পথ খুঁজছে। প্রশ্ন হলো, এই করিডর কি আদৌ বাস্তবে রূপ পাবে। আজারবাইজানের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য করিডর নির্মাণ করা রাশিয়া ও ইরান দুই পক্ষের কৌশলগত পরিকল্পনাকারীদের কাছেই সমস্যা হিসেবে হাজির হয়েছে। কেননা আজারবাইজানকে হুমকি মনে করে ইরান। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শিয়া অধ্যুষিত প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনাও বেড়েছে। বিশেষ করে আরাস নদীকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দুই দেশই সামরিক মহড়া প্রদর্শন করেছে। এই নদী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া থেকে ইরানকে পৃথক করেছে। বাস্তব বাদীরাই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়। সেপ্টেম্বর মাসে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, আইএনএসটিসি করিডর আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। আর এ মাসে তুরস্কে একটি ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মুহাম্মেদ বাকির কালিবাফ বলেন,আজারবাই- জানের সঙ্গে কিছু ভুল-বোঝাবুঝি আছে যদিও সম্প্রতি সেটা ঘুচে গেছে। রাশিয়া ও ইরান কাস্পিয়ান সাগরে কার্গো জাহাজ চলাচলে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি ইঙ্গিত করছে, দুই দেশ শুধু স্থলপথে নয়, কাস্পিয়ান সাগর দিয়েও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়।  ইরানের আব্বাস বন্দরে পরিবহন-সহায়ক উপকরণের একটি হাব তৈরির জন্যও দুই পক্ষে আলোচনা হয়েছে। ইরানের সঙ্গে রাশিয়া সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতেই বেশি আগ্রহী হবে। কেননা, প্রধান প্রধান সব সমুদ্রপথেই পশ্চিমাদের আধিপত্য রয়েছে, আর রাশিয়ার জাহাজের ওপর বিধিনিষেধও দিয়ে রেখেছে তারা।এরপরও ক্রেমলিন বিকল্প পথ খোলা রাখছে। এ মাসেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জ্বালানি, পরিবহন ও লজিস্টিক খাতে যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন বলে ঐকমত্যে পৌঁছান। আইএনএসটিসি যদি বাস্তব রূপ পায়, তাহলে পুবের বাজারে রাশিয়া ও ইরানের কোম্পানিগুলো আবার নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবে। নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব পক্ষের নিশ্চয়তা না পেলে বাণিজ্য করিডর তৈরি করা হলে ভবিষ্যতে একগাদা প্রতিবন্ধকতা এসে হাজির হবে। যেমন: এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে বিশাল আকারের পরিবহন অবকাঠামো প্রয়োজন। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় বেকায়দায় পড়া মস্কোর সেই সামর্থ্য আছে কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন থেকেই যায়।পরিশেষে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররা নিষেধাজ্ঞা, অন্তর্ঘাত কিংবা অন্য যেকোনো উপায়ে মস্কো ও তেহরানের এই যৌথ উদ্যোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে। এসব বিবেচনায় আইএনএসটিসি প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হওয়াটা প্রায় অসম্ভব। এ প্রেক্ষাপটে ইরান ও রাশিয়াকে বিমান যোগাযোগের মধ্য দিয়েই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া উচিত। কেননা, আঞ্চলিক যোগাযোগ করিডর স্থাপন আঞ্চলিক আরও বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও রাশিয়া কি নিজেদের অংশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতিমধ্যে ইউরোপীয় এবং প্রকৃতপক্ষে বৈশ্বিক ভূরাজনীতির আদলকেই বদলে দিয়েছে।  কিন্তু পুতিনের শাসনের পরিসমাপ্তি অনেক বেশি অগণনীয় পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যাবে। যেমন পুতিনের পতনের পর রাশিয়ান ফেডারেশন আপনা-আপনিই ভেঙে যেতে পারে এবং তার ধারাবাহিকতায় ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পূর্ব দিকে প্রসারিত হতে পারে। একইভাবে ইরানের ধর্মীয় নেতাদের শাসনের পতন পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দেবে। সেটি কার্যত কয়েক দশকের পুরোনো সুন্নি-শিয়া সাম্প্রদায়িক যুদ্ধের অবসান ঘটাবে এবং ইসরায়েল ও রক্ষণশীল আরব রাষ্ট্রগুলোর কৌশলগত অবস্থানকে ব্যাপকভাবে উন্নত করবে। এমনকি ইরাকও স্থিতিশীল হবে আর লেবানন এবং সিরিয়ার স্থিতিশীলতার যে উন্নতি হবে, তা বলাই বাহুল্য। রাশিয়া বা ইরানের সরকার আরও কয়েক বছর ঝুলে থাকতে পারত। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে তাদের আশু অবসানের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, পুতিন ইউক্রেনে জিততে পারবেন না, এমনকি এই লড়াইয়ে ড্রও করতে পারবেন না; অন্যদিকে ইরানে ধর্মীয় নেতারা তাঁদের জনগণের একটি বড় অংশের মধ্যে ঘৃণিত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। অবস্থাটি এমন, তাঁদের পতন এখনই যদি না-ও হয়, তাহলে ঠিক কখন হতে যাচ্ছে, সে প্রশ্নটিকে যৌক্তিক করে তুলেছে। আমরা এমন একটি বিশ্বে বাস করছি, যেখানে কোনো একটি সামরিক বাহিনীর পরাজয়ের খবর বা একটি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের খবর তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে অবস্থায় পুতিন ও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির মতো নেতারা স্বস্তিতে ঘুমাতে পারেন না। পুতিন ও খামেনির শাসন ব্যবস্থাগুলোর সামনে বাস্তবিকই কোনো ভবিষ্যৎ নেই, আবার তাঁদের প্রতিস্থাপনের কোনো সুস্পষ্ট ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কার্যকর বিকল্পও নেই। সেখানেই ভূরাজনৈতিক বিপদ নিহিত। যখন কোনো রাষ্ট্রে গণতন্ত্র সফল হয়, তখনো সেই রাষ্ট্রের যে রাজ্য বা অঞ্চলগুলো ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্রের সঙ্গে পরিচিত নয়, সেখানে রাতারাতি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।  এমনকি সেসব জায়গায় বছরের পর বছর অশান্তি ঘটতে থাকে। তবে ইরানকে ১৯৭৯ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় অপেক্ষাকৃত কম বেদনা ভোগ করতে হয়েছে। কারণ, সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কখনোই ধর্মীয় নেতাদের লক্ষ্য ছিল না। এর বদলে তাঁরা দ্রুত শাহের স্বৈরাচারের স্থলে মৌলবাদী স্বৈরতন্ত্রকে স্থলাভিষিক্ত করেন। কিন্তু সেই ধর্মীয় নেতারা ইরানের সমাজকে এতটাই ধ্বংস করেছেন যে তাঁদের সরিয়ে নতুন ধরনের কোনো শাসন প্রতিষ্ঠা করলেও তখন ইরানকে শাসনযোগ্য রাখা সম্ভব না-ও হতে পারে-এমনকি দেশটি তখন বিভিন্ন জাতিগত ও ভৌগোলিক লাইনে ভেঙে যেতে পারে। এ কারণে আগামী বছরগুলোতে এই শাসনের পতনের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক জয় আসবে, তা দ্রুত মস্কো ও তেহরানে একটি ভয়ংকর রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি করবে এবং সম্ভবত আরও উগ্রবাদী শক্তির উত্থানের সুযোগ তৈরি করবে। নিকট ভবিষ্যতে ইরানি বিপ্লবের বিপন্ন হবার সম্ভাবনা কম মনে হয়। তবে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ইসরাইল বা তার পৃষ্ঠপোষক আমেরিকার সামরিক হামলার মতো ঘটনা ঘটলে অথবা এখন পাশ্চাত্যের সাথে চীন-রাশিয়া বলয়ের যে লড়াই শুরু হয়েছে তাতে শেষোক্তদের সর্বাত্মক পরাজয় ঘটলে তার প্রভাব ইরানের ওপরও পড়বে। তবে এই প্রভাব শাসন পরিবর্তন পর্যন্ত ঠেকবে কি না সেটি নির্ভর করবে ইরানি সাধারণ মানুষের ওপর দেশটির থিওক্রেসি নিয়ন্ত্রিত ডেমোক্রেসির বিদ্যমান ব্যবস্থা কতটা প্রভাব বজায় রাখতে পারে তার ওপর। লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক