খানসামা-চিরিরবন্দর-৪ আসনে আগাম নির্বাচনী হাওয়া

163

তফিজ উদ্দিন আহমেদ,খানসামা(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ ২০২৩ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। তবে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা শুরু না হলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। পাড়া-মহল্লাতে তৈরি হয়েছে জাতীয় নির্বাচনী আমেজ। ভোটারদের মন জয় করতে নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আ.লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। মাঠে  দেখা যাচ্ছে না  প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপিকে। আগামি নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ আসনটি ধরে রাখতে আ. লীগ বন্ধপরিকর হলেও বিএনপির সম্ভব্য প্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে। এদিকে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামীলীগ অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরতে ভোটারদের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীদের অপেক্ষা করা ছাড়া নির্বাচনী কর্মকান্ড নেই তেমন। তবে সম্ভব্য নির্বাচন ধরে নিয়ে কেন্দ্রীয় নানা কর্মসূচির মাধ্যমে কৌশলে ভোটের প্রচারণা চালিয়ে চাচ্ছে বিএনপির সম্ভব্য প্রার্থীরা।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন নৌকার টিকেট এ নিয়ে সম্ভব্য প্রার্থীরা রয়েছেন উদ্বেগে। জোর গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন সবাই। তবে দিনাজপুর ৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রাণালয়ের সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপির পক্ষ থেকে এখনও কাউকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কোন রকম প্রচার-প্রচারনা করতে দেখা যায়নি। দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রাণালয়ের সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি ছাড়াও এ আসনে আ.লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন, সাবেক হুইপ,দিনাজপুর-৪ আসনের তিন বারের নির্বাচিত সংসদ, দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মিজানুর রহমান মানু, জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম তারিক, চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্দিনের সাবেক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সহকারী ও গ্রেনেড হামলার আহত সৈনিক শ্রী জ্যোতিষ চন্দ্র রায় ছাড়াও দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন তিনিও নৌকা মার্কার মনোনয়ন  প্রত্যাশী ও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে বিএনপি থেকে মনোয়নের প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ আখতারুজ্জামান মিয়া। ২০০৬ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ডাব মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। এই নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পাশাপাশি দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন সাবেক এই সংসদ সদস্য। তবে আবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তিনি। অপর দিকে বিএনপি থেকেই মনোনয়ন পেতে চান ২০০৬ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা লুসাকা গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি হাফিজুর রহমান সরকার। তবে দলীয় প্রতীক না পেয়ে তিনিও ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এরপরেও আগামী নির্বাচনে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আফতাব উদ্দিন মোল্লা নির্বাচনে নামবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে এখনোও ওনার কোনো প্রকাশ্য ঘোষণা নেই। অপরদিকে জাতীয় পার্টির খানসামা উপজেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আঃ আলিম হাওলাদার ও জাতীয় পার্টির সাবেক ছাত্রনেতা ও খানসামা উপজেলা শাখার সভাপতি মোনাজাত চৌধুরী মিলন আগামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দী ভাবা হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেনকে। তার অনুসারীরা বলছেন, হাইকমান্ড থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে গ্রীন সিগন্যাল পেয়েছেন তিনি। যে কারণে প্রতিদিনই বিন্নিপাড়া-মহল্লায় গনসংযোগের পাশাপাশি দলীয় সাংগঠনিক ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে ভাবনা জানতে চাওয়া হয় এলাকার সাধারণ, তরুণ ও নতুন বা ভোটারদের কাছে। তারা বলেন, স্মার্ট দেশে স্মার্ট নেতৃত্বই দরকার। যারা দুর্নীতি, অনিয়ম, মাদক ও সকল বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে আগামী দিনের নেতৃত্ব দিবেন এলাকার উন্নয়ন করবেন এরকম যোগ্য প্রার্থীকেই তারা ভোট দিবেন। এছাড়া ভোটারদের প্রত্যাশা, শুধু ভোটের সময় নয়, নির্বাচিত এমপি সারা বছরই তাদের গ্রাম-মহল্লায় আসবেন। তবে সাধারণ জনগণ বলছেন, যাদের কর্মী আছে, যারা এলাকায় থাকেন, দলের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখেছেন, তাদের মধ্যেই কেউ প্রার্থী হলে ভালো হয়। কেউ বলছেন পরিবর্তন হোক, আবার কেউ বলছেন পরিবর্তন চাইলেই হবে, দল চালানোর মত দক্ষতা ও জনবল থাকতে হবে, জনগণের সঙ্গে মিশতে হবে, বাড়িতে চেয়ারে বসে রাজনীতি হয় না। এছাড়াও বর্তমান এমপিকেই আরেকবার সুযোগ দেয়ার  ইঙ্গিত দেন অনেকে। পাশাপাশি পরিবর্তনও চান কেউ কেউ।