রায়হান আহমেদ তপাদার: মানুষের মানবিক মূল্যবোধ কি দিন দিন কমে যাচ্ছে? এ প্রশ্ন চলমান সমাজে ব্যাপকভাবে উত্থাপিত হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ইদানীং ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা। মৃত্যু, অপমৃত্যু ও দুর্ঘটনা বিশ্বে এখন ডালভাতের মতো।পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু হওয়ার আগেই বিশ্বের শতকোটি মানুষ রাজনৈতিক, মানবিক ও অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়েছে। তবে সামাজিক জীবনযাপনের তাগিদে বা নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে সে বিপরীতমুখী আচরণও করে। নিজেকে ক্ষমতাবান হিসেবে প্রকাশ করার লিপ্সায় মত্ত হয়। তখন উপকারের রূপ বদলে গিয়ে তা স্বার্থসিদ্ধির পন্থায় পরিণত হয়ে যায়। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও প্রতিযোগিতার যুগে মানুষ ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সভ্যতার বিকশিত সময় ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগেও মনুষ্য সমাজে সহিংসতা, রক্তপাত, হানাহানি, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসাপরায়ণতা আর উন্মাদনার যে চিত্র প্রায় নিত্য ফুটে উঠছে-এতে মানবতা আজ বিপন্ন। পৃথিবীতে মানুষের যা কিছু উদ্যোগ ও উদ্যম- এর সবকিছুই শান্তিতে বেঁচে থাকার লক্ষ্য ঘিরে আবর্তিত হয়। পৃথিবী সুখময়, না দুঃখময়-এ নিয়ে তাত্ত্বিক বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু এ কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত যে, বিশ্বে নিরাপদে বেঁচে থাকার সাধনাতেই মানুষ নিজেকে ব্যস্ত রাখে। দুঃখের বিষয়- আমরা যত সভ্যতার দিকে ধাবিত হচ্ছি, ততই যেন মানবিক গুণাবলি হারিয়ে ফেলছি। তবে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব অন্ধের মতো ইসরায়েলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ইসরায়েল একটা পরিষ্কার বার্তা পেয়ে গেছে যে গণহত্যার জন্য তারা লাইসেন্স পেয়ে গেছে। তারা এখন যা খুশি তা-ই করতে পারে। তারা হাসপাতালে, উপাসনালয়ে, শরণার্থীশিবিরে সব জায়গায় বোমা ফেলছে। এমন জায়গাগুলো তারা নিশানা করছে, যে জায়গাগুলোয় দিশেহারা ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছেন। তারা খাবার, পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সব বন্ধ করে দিয়েছে। এমন ঘটনা বিশ্বের কোথাও কখনো ঘটেনি। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও নয়। গাজার বাসিন্দারা হলোকস্টের চেয়েও বড় হলোকস্টের মধ্যে আছেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে বিশ্ববাসীর জিজ্ঞাসা তাঁর কেমন লাগছে এসব দেখে। ঋষি সুনাক, মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর তাঁদের প্রতিক্রিয়া কী? এ পর্যন্ত চার হাজারের বেশি শিশু খুন হয়েছে। তারপরও তাঁরা ঘুমান কী করে? তারপরও তাঁরা তাঁদের জীবন উপভোগ করছেন কী করে? যখন তাঁদের ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি প্রশ্ন করবে, তখন এই হত্যাকাণ্ডের পক্ষে তাঁরা কী বলে সাফাই গাইবেন? ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। যখন এই সব নেতা-নেত্রীর ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি ইতিহাসে পড়বে যে তাদের পূর্বপুরুষেরা এসব করেছেন, তখন তাঁরা কী জবাব দেবেন? যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এই হত্যাকাণ্ডের সহযোগী, তাতে কোন সন্দেহ নেই। যে বোমা গাজায় ফেলা হচ্ছে, সেই বোমা আমেরিকায় তৈরি, যে জাহাজ তারা ব্যবহার করছে, সেটাও আমেরিকার। ইসরায়েলের কাছে যত অস্ত্রশস্ত্র আছে, সবই আমেরিকা ও পশ্চিমাদের তৈরি। এই গণহত্যার জন্য তারাই দায়ী। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে বলে তারা আসলে বিশ্বকে বোকা বানাতে চায়। কিন্তু তারা কত দিন এই চাতুরী করবে? যথেষ্ট হয়েছে। মানুষ এখন সব বোঝে। এসবের মানে হচ্ছে পশ্চিমা সরকারগুলোকে কোনো কিছুই স্পর্শ করছে না। তারা তাদের অনুভূতিকে খুন করে ফেলেছে।তারা তাদের অনুভূতিকে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়েছে। গাজায় এখন আর মরফিনের দরকার নেই। ৭৫ বছর ধরে তারা মরফিনের ওপর বেঁচে আছে। এবার রোগ নির্মূল করতে চায় ফিলিস্তিন। এবারও যদি রোগ নির্মূল না হয়, তাহলে তারা সহিংসতার বৃত্তে ফিরে যাবে। ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা যে কষ্ট ভোগ করছেন, পরবর্তী ৭৫ বছরেও সেই কষ্টের শেষ হবে না। ইসরায়েল যদি মনে করে তারা সব ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করে পুরো দেশ নিয়ে থাকবে, তা-ও তারা শান্তিতে থাকতে পারবে না। যদি না তারা ফিলিস্তিনের মুক্তি দেয়, তারা যদি মাটি ছেড়ে না যায় এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের বাঁচতে না দেয়।তাহলে ফিলিস্তিন ভূমিতে, তাদের নিজস্ব পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নিয়ে বাঁচতে চায়। তারা তাদের নিজেদের বিমানবন্দর চায়, তাদের ছেলেমেয়েরা আর সব দেশের ছেলেমেয়েদের মতো নিজের দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাক। কেন তাদের এভাবে বাঁচতে হবে? ফিলিস্তিন দখলদারের খপ্পরে পড়া একটা দেশ। গাজা ফিলিস্তিনের দক্ষিণ দিককার প্রদেশ। পশ্চিম তীরের দখলদারদের কর্তৃত্বে চলে গেছে। গাজার সঙ্গে পশ্চিম তীরের কোনো সীমান্ত নেই। পশ্চিম তীরে যেতে হলে ইসরায়েলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এটা একটা ছোট্ট এলাকা। এর আয়তন ৩৬৩ বর্গকিলোমিটার। দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার, প্রস্থ ১৫-১৭ কিলোমিটার। মিসরের রাফার সঙ্গে একটি সীমান্ত আছে। একদিকে ভূমধ্যসাগর। পূর্ব ও উত্তর দিকে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনকে একরকম ঘিরেই রেখেছে ইসরায়েল। অনেকে গাজাকে উন্মুক্ত জেলখানা বলে। বিশ্লেষকদের মতে, এটা একটা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প ছাড়া কিছুই নয়। নাৎসিরা যেমন করেছিল, এটাও তেমন। ইসরায়েল বলতে চাইছে গাজার ভেতর থেকে তারা সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে সরে তারা কোথায় গেছে? তারা গাজার চারপাশ সৈন্য দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এভাবে গাজার দম বন্ধ করে ছাড়ছে। গাজাবাসী গাজা থেকে বের হতে পারেন না, ঢুকতেও পারেন না। যদি এক হাজার মানুষ গাজা থেকে অন্যত্র যেতে চান, ইসরায়েল চার-পাঁচজনকে অনুমতি দেয়। খাবার, ওষুধবাহী গাড়ি হলেও ইসরায়েলিদের অনুমতি নিতে হয়।এখন ইসরায়ে- লিরা নানা ধরনের গল্প সাজাচ্ছে। প্রয়োজনের সময় মানুষ এমন গল্প সাজায়। গাজায় ২০০৮, ২০১২, ২০১৪, ২০২১, ২০২২ সালেও হামলা হয়েছে। গাজার ৬০ ভাগ বিধ্বস্ত। তাঁদের বাড়িঘর নেই। তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁবুতে বাস করেন।যদি তারা সত্য বলতই, তাহলে তারা গাজা পুনর্গঠন করতে দিত, বারবার বোমা ফেলত না। এই অঞ্চলের ৭৫ ভাগ মানুষের কাজ নেই। বেকার এই মানুষগুলো বাকি ২৫ ভাগের ওপর নির্ভর করে। এই মানুষগুলো প্যালেস্টিনিয়ান ন্যাশনাল অথরিটির কর্মী। গাজার মানুষ রামাল্লার ওপর নির্ভরশীল। ইসরায়েল পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, এর বিল দেয় রামাল্লা। গাজায় ৩৫টি হাসপাতাল আছে। বন্ধুরাষ্ট্রগুলো এখানকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাসপাতাল করে দিয়েছে। জাতিসংঘের স্কুলে বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। তারা শিক্ষাকে সবচেয়ে মূল্যবান মনে করে। ধরুন, কারও পকেটে যদি টাকা না থাকে, কিন্তু একটি পিএইচডি থাকে, তাহলে মা-বাবা কন্যা সম্প্রদানে একটুও ইতস্তত করবেন না। এছাড়া গাজায় ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতাল আছে, মালয়েশিয়ারও আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে গাজার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করেন। এই মুহূর্তে গাজার হাসপাতালগুলোয় বাংলাদেশ থেকে পাস করা ৩০ জন ডাক্তার কাজ করছেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়।ইসরায়েলিরা যা করেছে তা হলো তারা হাসপাতাল গুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কারণ, এখানে এসে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকগুলো হাসপাতাল জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ না থাকলে ইনকিউবেটরে থাকা বাচ্চারা কীভাবে বাঁচে? অস্ত্রোপচার কীভাবে চলছে, বলুন? নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র প্রায় বন্ধ। আলো ছাড়া তো অস্ত্রোপচার হয় না। হাসপাতালগুলো ধসে পড়েছে। শোনা যাচ্ছে, জো বাইডেন যুদ্ধে বিরতি চান। তাঁরা কখনো গাজায় এসে দেখেননি যে এখানে কী অবস্থা। তাঁরা এখনো ইসরায়েলের পেছনে দাঁড়াতে চান। কিন্তু তাঁদের জনগণই বিরোধিতা করছেন। তাঁরাও বলছেন, যথেষ্ট হচ্ছে। এখন তাঁদেরও মূল্য চুকাতে হবে। ফিলিস্তিনিরা সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছে। মানুষের তো বিবেক-বুদ্ধি আছে। তারা জানে বর্বরতা দেখেও চুপ করে থাকার অর্থ বর্বরতাকে সমর্থন দেওয়া। মানুষ সেটা করতে পারে না। কিন্তু এ কথা সুনিশ্চিত, বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই তাদের নেতাদের জবাবদিহি করবে। কারণ, তারা মানবিক মূল্যবোধের কথা সবচেয়ে বেশি বলে। ভেবে দেখুন তারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার নিয়ে কীভাবে বক্তৃতা দিয়ে বেড়ায়। যখন মানুষ দেখে তারা এসব মূল্যবোধের তোয়াক্কা করে না, তখন তারা তাদের কীভাবে বিশ্বাস করবে? তাদের কি কোনো দিন কেউ আর বিশ্বাস করবে? আমি তাদের বলতে বোঝাচ্ছি মার্কিন সরকার ও তাদের মিত্রদের। জনগণকে নয়। বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে ফিলিস্তিন। তারা রক্ত দিচ্ছে, তাদের শিশুসন্তানেরা জীবন দিচ্ছে, তাদের নারীরা মরছেন,এমনকি তাদের ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এসব কিছুর বিনিময়ে তারা মানুষের হৃদয়টা পেয়েছে। মানুষের সমর্থনই এখন তাদের ভরসা। এদিকে আরব বিশ্ব যা করছে তা ঠিকঠাক। কিন্তু যখন মানুষ ডুবে যেতে থাকে, তখন তাকে টেনে তুলতে হয়। কেবল প্রতিশ্রুতিতে কাজ হয় না। ফিলিস্তিনিরা ডুবতে যাচ্ছে। সাঁতরাচ্ছে না। এখন কিছু একটা করার সময়। তারা মিষ্টি কথা বলছে। তারা ফিলিস্তিনের সমর্থনও দিচ্ছে। কিন্তু মুখের কথা কি তাদের ডুবে যাওয়া রুখতে পারে? গাজার মানুষের খাবার, পানি, ওষুধ, জ্বালানি দরকার। তাদের কাগজে কী লেখা আছে, তা এখন জানার দরকার নেই। ২২টি আরব দেশ ট্রাকে পতাকা তুলে গাজা সীমান্তে গিয়ে দাঁড়াক। জোর করে ঢুকে পড়ুক। ইসরায়েল কী করবে? তারা সেটা কেন করছে না? জর্ডান ইসরায়েলি কূটনীতিবিদকে বের করে দিয়েছে। আরও চারটি দেশ আছে, যাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক আছে। তারাও নিজেদের কূটনীতিক প্রত্যাহার করে ইসরায়েলি কূটনীতিককে বের করে দিতে পারে। অন্তত এটা তো তারা করতে পারে। তারা জোর গলায় বলতে পারে যথেষ্ট হয়েছে। তোমাকে এর জন্য শাস্তি পেতে হবে। কিন্ত বিষয়টা হয়ে গেছে এমন যে ইসরায়েলকে তার মিত্ররা বলছে, খুন করতে থাক, তবে রয়েসয়ে। আমাদের চোখের সামনে না। এই পরামর্শ আইজ্যাক রবিনকেও দিয়েছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার, মানুষ মারো, তবে একটু আড়াল করে। এ ব্যাপারে স্মটরিচ যা বলেছেন, যা করেছেন, তা অগ্রহণ যোগ্য। স্মটরিচ যেভাবে ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করছেন, একই কাজ যদি কোনো ফিলিস্তিনি করতেন, তাহলে কী হতো ভাবুন। তবে নেতানিয়াহুর এই সরকার অন্যগুলোর চেয়ে কট্টরপন্থী হলেও আদতে ইসরায়েলের বিগত সরকারগুলোও একই ধ্যানধারণা নিয়ে চলে। তারা মুখোশ পরে পেছনে ছুরি মেরেছে।আর নেতানিয়াহুর এই সরকার কোনো কিছু গোপন করার প্রয়োজন মনে করে না। ফিলিস্তিনি বাবা-মায়ের সন্তান সে যে-ই হোক না কেন, তারা একে অন্যের পরমাত্মীয়। হ্যাঁ, তাদের মতাদর্শগত পার্থক্য আছে। ফাতাহ রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে। শক্তির ভারসাম্য নেই বলেই তারা বরাবর শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে স্বাধীনতা চেয়েছে। হামাস চায় যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে। ফিলিস্তিনের ৭০ ভাগ মানুষ কোনো দলকেই সে অর্থে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেন না। তবে এক জায়গায় তারা সবাই এক। তারা সবাই স্বাধীনতা চায়। শান্তি চায়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি আমরা তাকাই, তাহলে দেখতে পাই জাতিগত সংঘাত।এক ধর্ম অন্য ধর্মের বিকাশকে কীভাবে ব্যাহত করবে, সেই পরিকল্পনায় ব্যস্ত। যত আধুনিক আমরা হচ্ছি, ততই সংঘাত বাড়ছে, মানুষ মারার নতুন নতুন যন্ত্রকৌশল তৈরি হচ্ছে, এতে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো বাহবাও পাচ্ছে! শক্তিমত্তার প্রদর্শন হয়ে উঠেছে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। জাতিগত সংঘাত কোনো জাতিকেই নিঃশেষ করে দিচ্ছে। একেক অঞ্চলে একেক ধরনের সমস্যাকে কেন্দ্র করে চালানো হয় অভিযান, সাধারণ মানুষের প্রাণ যায়। একেক শক্তির প্রভাবে একেকজন দমিত হচ্ছেন, এর রেশ ধরে অন্য কোনো জায়গায় আরও নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতাবাদ আধুনিক পৃথিবীর কোনো ব্যবস্থা হতে পারে না। এমতাবস্থায় প্রশ্ন জাগতেই পারে, আগামী দিনের পৃথিবী কোন দিকে যাচ্ছে। আসলেই আমাদের ভাবিয়ে তুলে আগামীর পৃথিবী কি শুধু শক্তিমত্তার জয়গানে ভরে উঠবে, নাকি সব মানুষ সমান সুযোগে বাঁচবে। লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক raihan567@yahoo.com