সার্ভার জটিলতায় হোসেনপুরে প্রাথমিকের শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারছেননা : সময় বৃদ্ধির দাবি

48

সঞ্জিত চন্দ্র, শীল হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) :

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের নিজ উপজেলায় বদলির অনলাইন কার্যক্রম গত শনিবার (৩০ মার্চ) শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ১ এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত। কিন্তু সার্ভার জটিলতার কারণে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার শিক্ষকরা আবেদন করতে না পেরে চরম বিভাগে পড়েছেন। তাই ভুক্তভোগী শিক্ষকরা আবেদনের সময় বৃদ্ধিসহ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরী প্রতিকার দাবি করেছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ও গতকাল রোববার বেলা দেড়টা পর্যন্ত বারংবার চেষ্টা করেও সার্ভার জটিলতায় হোসেনপুর ও আশপাশের কোনো কম্পিউটার দোকান থেকেই শিক্ষকরা বদলির আবেদন সম্পন্ন করতে পারেননি। সব তথ্য আপডেট করে সাবমিট করলেও কম্পিউটার স্ক্রিনে লেখা আসে “এই মুহূর্তে বদলির কার্যক্রম চালু নেই—।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক আবেদনকারী শিক্ষক নয়া দিগন্তকে জানান, গত দুইদিন ধরে বিরামহীন চেষ্টা করেও আবেদন সম্পন্ন করতে পারছিনা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বদলির আবেদন নিয়ে। আবেদন করার মাত্র ৩ দিন সময় পেয়ে সার্ভার জটিলতার মধ্যে কিভাবে আবেদন করবেন তা তাদের বোধগম্য নয়। অনেকেই আবার এই বদলি নিয়ে এমন নৈরাজ্যের বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেটকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।এ ব্যাপারে হোসেনপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা শিক্ষা অফিসে বহুবার চেষ্টা করেও দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস এক আদেশ বলা হয়, গত ৩০ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষকেরা অনলাইনে বদলির আবেদন করবেন। ২ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক আবেদন যাচাই করবেন। ৩ ও ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা আবেদন যাচাই শেষ করবেন। ৫ থেকে ৭ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা আবেদন যাচাই ও অগ্রগতি শেষ করবেন। আদেশে আরও বলা হয়, ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহকারী শিক্ষকের আবেদন যাচাই ও অনুমোদন এবং প্রধান শিক্ষকের আবেদন যাচাই ও অগ্রগতি সম্পন্ন করবেন। ১৫ থেকে ১৭ এপ্রিল বিভাগীয় উপপরিচালক আবেদন যাচাই ও অনুমোদন করবেন। এদিকে শিক্ষকদের বদলির আবেদনের বিষয়ে একাধিক শর্ত দিয়েছে অধিদফতর। শর্তে বলা হয়েছে, শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ তিনটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে পছন্দ করবেন। তবে কোনো শিক্ষকের একাধিক পছন্দ না থাকলে একটি বা দুটি বিদ্যালয় পছন্দ করতে পারবেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলির আদেশ জারি হলে তা বাতিল করার জন্য পরবর্তী সময় কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবেন না। তাছাড়া  আবেদনকারী শিক্ষকের পছন্দক্রম অনুযায়ী বদলি হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। একাধিক আবেদনকারীর পছন্দকে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বদলির অনলাইন আবেদন শুরু হয় ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি।