শালিখায় অভিনব কৌশলে কিস্তি আদায় করছে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান

378
smart

শহিদুজ্জামান চাঁদ,মাগুরাঃ করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে দোকানপাট, ব্যবসা অনেকাংশে বন্ধ করতে হচ্ছে। এতে দিনমজুররা শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে ঋণগ্রস্তরা কিস্তি পরিশোধে হিমসিম খাচ্ছেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মাগুরার শালিখায় সকল এনজিও কে মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন মাগুরা জেলা প্রশাসন। শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর রহমান জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। একসাথে বেশি মানুষের সমাগমের কারণেও করোনা ছড়াতে পারে। তাই সকলকে কেনাকাটা থেকে শুরু করে সকল কাজে ঘরের বাহিরে কম বের হতে বলা হয়েছে। তাছাড়া করোনা রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন,শিশু নিলয় ফান্ডেশন,রোভা ফাউন্ডেশন,বাসা,বিজ ও পদক্ষেপ সহ শালিখার বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান ফিল্ড কর্মী দ্বারা ও মোবাইলের মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ সুবিধা নিয়েছেন। সপ্তাহের ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিনই এনজিও কর্মীরা কিস্তি আদায় করেন। কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষে গুলো কাজ বন্ধ হওয়ায় তারা কিস্তি দিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমাখালী গ্রামের একাধিক দিনমজুর জানান এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি ঠিকই কিন্তু করোনা ভাইরাসে সচেতন থাকতে কাজ কর্ম করতে পারছি না৷ অনেক সময় ঘর থেকেই বের হতে পারছিনা৷ এনজিও গুলোর কিস্তির টাকা কি ভাবে দেব৷ সরকার আমাদের দুঃখ বুঝেছেন৷ যে কারনে এনজিও গুলোকে আপাতত কিস্তি নিতে নিশেধ করেছেন৷ তবুও তারা গোপনে আমাদের কাছে ফিল্ড কর্মী দ্বারা এবং মোবাইলের মাধ্যমে জোর জুলুম করে কিস্তি চাইছেন৷ আমরা নিজ নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় কাজ করি এবং শ্রম বিক্রি করে কিস্তির টাকা দিয়ে থাকি৷ এখনতো আমরা কোথাও যেতে পারছিনা৷ এমনিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে৷ তার পর আবার কিস্তির জ্বালা৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো আর এক ব্যক্তি জানান করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে ভয় করছে৷ এমনকি কোথাও কাজের জন্যও যেতে পারছিনা। অথচ এনজিওগুলোকে ঠিকই কিস্তি দিতে হচ্ছে৷ জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনা পরিস্থিতি শিথিল না হওয়া পর্যন্ত এনজিগুলোকে কিস্তি আদায় না করতে নির্দেশ দিয়েছেন৷ অথচ এনজিও গুলো ঠিকই কৌশলে কিস্তি আদায় করছেন৷ এব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নিলয় ফান্ডেশন সীমাখালী শাখায় গিয়ে ম্যানেজার মোঃ আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন ২৬ তারিখ থেকে আমাদের কিস্তি নেওয়া বন্ধ আছে৷ এর আগ পর্যন্ত আমরা কিস্তি নিতে পারবো৷ জেলা প্রশাসক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কিস্তি নেওয়া নিশেধ বিষয়টি জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন এরকম কোন নির্দেশ কিংবা চিঠি আমরা জেলা প্রশাসক থেকে পায়নি৷ আপনার অফিসে জাতির পিতা ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ছবি কেন নেই জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন ছবি নেই ঠিকই ক্যালেন্ডারতো আছে৷ অপর এনজিও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন সীমাখালী শাখার ম্যানেজার জহিরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও করে ভয় দেখায়৷ পরে তিনি বলেন আমাদের মূল প্রতিষ্ঠান থেকে কিস্তি নিতে বলেছেন৷ তাই আমাদের ফিল্ড কর্মীরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে কিস্তি আদায় করছেন৷ তবে বেশির ভাগ মোবাইলের মাধ্যমে কিস্তি নিচ্ছি৷ এব্যাপারে মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন এনজিও গুলোতো কিস্তি নেওয়ার কথা না৷ তবুও যেহেতু কিস্তি নিচ্ছিন আমি বিষয়টি দেখছি৷