‘রাস্তায় তো মানুষই নাই বাবা, এই জন্য ইনকামও নাই’

223

শাহরিয়া হৃদয়, ঢাকা: কী চাচা,কেমন আছেন? চাচা বললেন,‘চাচা ভাল’। ইনকাম এখন কেমন? -‘রাস্তায় তো মানুষই নাই বাবা, এই জন্য ইনকামও নাই।’ সারাদিকে কতটাকা কামাতে পারেন?- বাবা এই বেলায় ১৩০ ট্যাহার (টাকার) কাম (কাজ) করছি। গাড়ির জমা ১০০ ট্যাহা (টাকা),করোনা আমাদের মারবো না, মারবো ক্ষিধায় ।

কথা বলছিলাম রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান শাহবাগ মোড়ে ষাটোর্ধ এক রিকশাওয়ালার সঙ্গে। অন্যান্য দিনে ট্রাফিক পুলিশ জ্যাম সরাতে ব্যস্ত থাকলেও আজ তেমন ছিলো না যানবাহনের আনাগোনা।

এই করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে আমাদের দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর উপর। অফিস বন্ধ থাকলেও চাকরিজীবীরা মাস গেলে বেতন পাবেন ঠিকই, কিন্তু দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো একদিন কাজ না করলে পেটে দানাপানি কতটুকু পড়বে, সে কথা মুখে মুখে। যদিও সরকার অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার কথা বলেছে। ইতোমধ্যে সরকারি ত্রাণ দেওয়া শুরুও হয়েছে।

চাচার সাথে কথা বলে জানা গেলো, তার বাড়ি হবিগঞ্জে। পরিবারের সদস্য ৬ জন। যা ইনকাম হয়, সবটুকুই খরচ হয় পরিবারের পিছনে।। একদিন অসুস্থ থাকলে বা ইনকাম করতে না পারলে সমস্যার মধ্যে পড়ে যান। এমনি সময়ে করোনার মতো মহামারি এসে উনার স্বাভাবিক জীবনকে অনেকটা পাল্টে দিয়েছে।

স্কুল, কলেজ আর ভার্সিটি সব বন্ধ। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই চলে গেছেন গ্রামের বাড়ি। এসব শিক্ষার্থীদের নিয়েই এই ছোট্ট শহরের অর্ধেক গণপরিবহন চালিত হয়। তার উপর কাল থেকে সব অফিস আদালত বন্ধ হলে এসব শ্রমজীবী মানুষদের ইনকাম নেমে যাবে অনেকটা শূন্যের কোটায়।

দেশ লকডাউন হয়ে গেলে সরকার এবং বিত্তবানরা এসব অসহায় মানুষদের প্রতি নজর দেবেন এমন প্রত্যাশা তার।