ঠাকুরগাঁওয়ে চেয়ারম্যানের লোক না হওয়ায় সরকারি ত্রাণ পাচ্ছে না আখানগর আশ্রায়ণের বাসিন্দারা

207

মোঃ মজিবর রহমান শেখ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা সহ ঐ ইউনিয়নের ১ থেকে ৬ নং ওয়ার্ডের অস্বচ্ছল, হতদরিদ্র ও করোনা পরিস্থিতির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষেরা সরকারি ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন উক্ত এলাকার বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম শুধুমাত্র তার পছন্দের ও তার বাড়ীর আশেপাশের লোকদের মাঝেই সরকারি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে, ফলে ত্রাণ পাচ্ছে না ঐ ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ।তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ২ নং আখানগর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম।১৫ মে শুক্রবার  সরেজমিনে গিয়ে দেখা জানা যায়, আখানগর ইউনিয়ন আশ্রায়ণ প্রকল্পে উপস্থিত হলে প্রকল্পের বাসিন্দারা মনে করে এই বুঝি সরকারি ত্রাণ দিতে এলো, তারা দৌড়াদৌড়ি করে ছুটে আসে এ প্রতিনিধির কাছে। পরে যখন জানতে পারে সংবাদকর্মী তখন অনেকে হা-হুতাশ করে নিজেদের দূর্ভোগের কথা তুলে ধরে। নাজু নামে আশ্রায়ণের এক নারী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে, বাহিরে কাজে যেতে পারি না, এদিকে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বার বার অনুরোধ করার পরও কোন রকম সাহায্য-সহযোগিতা করছে না, আমরা এখন কার কাছে যাবো, কে আমাদের সাহায্য করবে। এভাবে আর কয়েকদিন গেলে আমরা হয়তো না খেতে পেয়েই মারা যাবো। এলাকার চেয়রম্যান-মেম্বাররা কিছু করছে না- এমন প্রশ্নে তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান তার পছন্দের লোকদের ত্রাণ দিচ্ছে, আমরা বার বার চেয়েও পাচ্ছি না। একই কথা জানান, আশ্রায়ণে বাস করা আরেক নারী শেফালী রাণী। আশ্রায়ণের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী মকবুল জানান, শুধু শুনতেছি সরকার নাকি গরীব-দূ:খীদের ত্রাণ দিচ্ছে, কিন্তু আমরা আজোও ত্রাণের এক ছটাক চালেরও দেখা পেলাম না। চেয়ারম্যান বলেছে আমার কাছে ত্রাণ নাই, সরকার ত্রাণ দিলে তোমরাও পাবা।এসব বিষয়ে জানতে আখানগর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা। আমি সরকারি ত্রাণ পাওয়া সাপেক্ষে সব এলাকার দরিদ্রদের মাঝে তা বিতরণের চেষ্টা করি। কিছু মানুষ আমার সুনাম নষ্ট করতে এসব অভিযোগ করছে। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার  সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, করোনা প্রাদূর্ভাব দেখা দেওয়ার শুরু থেকে আমরা প্রত্যহ ধারাবাহিকভাবে সদরের প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে আসছি। এরপরও যদি কোন এলাকায় বাদ পড়ে তাহলে তা অবশ্যই দূ:খজনক। আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করছি। এদিকে আখানগর ইউনিয়নে সরকারি ত্রাণ বিতরণে পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছে মো: আরিফ নামে এক ব্যক্তি। তিনি তার সাধ্যমতো এলাকাবাসির পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে ২০০ পরিবারকে সহায়তা করেছেন তিনি, আগামীতে অত্র ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের ঈদসামগ্রী প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সরকারি ত্রাণও পাচ্ছে না ইউনিয়নের দেবীডাঙ্গা, খলিফাপাড়া, কুয়াপাড়া, কালীবাড়ী সহ বরমতল এলাকার বাসিন্দারা। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।