রফিকুল ইসলাম খান, গফরগাঁও প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পোড়াবাড়িয়া গ্রামে যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী সেলিম (৩৪) কর্তৃক তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসী মানছুরাকে (২৫) শ্বাসরোধ করে হত্যায় অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার ( ৫ নভেম্বর) সকালে পোড়াবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘাতক স্বামী সেলিম ও পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের শাশুড়ি জেসমিনকে আটক করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা খাতুন ও গফরগাঁও থানার ওসি অনুকূল সরকার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর আগে উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের পোড়াবাড়িয়া গ্রামের সিরাজ শেখের ছেলে সেলিমের সাথে পাশ্ববর্তী উস্থি ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের কাজল মীরের মেয়ে মানছুরার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। মানছুরা- সেলিম দম্পত্তির ছাবিতা নামে প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বরপক্ষকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেয় কাজল মীর। এরপরও নানা অজুহাতে মানছুরার পিতার কাছ থেকে আরও লাখ খানেক টাকা আদায় করে নেয় স্বামী সেলিম ও তার পরিবারের লোকজন। দাবীকৃত যৌতুক না পেলে কিংবা পেতে দেরী হলে মানছুরাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করতো তার শশুর বাড়ির লোকজন। মানছুরার মা শামছুন্নাহার (৪০) কাঁদতে কাঁদতে বলে, গত মাসে দুই দফায় ১১ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৬ হাজার টাকা টাকা দেওয়া হয় মানছুরার স্বামী সেলিমকে। সেলিম আরও ১০ হাজার টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল। এই ১০ হাজার টাকা না পেয়ে মানছুরাকে গলা টিপে হত্যা করেছে পাষন্ডরা। খবর পেয়ে গফরগাঁও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে কয়েক’শ উৎসুক জনতার সামনে মানছুরার প্রায় সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশুকন্যা ছাবিতা থানা পুলিশকে সাক্ষ্য দেয় তার বাবা সেলিম তার মা মানছুরাকে গলা টিপে হত্যা করেছে। নিহতের ছোট বোন কলেজ ছাত্রী আরজিনা আক্তার মীম বলেন, আমাদের ছোট্ট ভাগ্নি এ হত্যা একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। সে যেভাবে সকলের সামনে অপকটে হত্যার বিবরণ দিচ্ছে তাতে আর কোন স্বাক্ষ্যপ্রমানের প্রয়োজন পড়েনা। আমার বোনের স্বামী ও তার মায়েই হত্যাকারী। আমরা বোনের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি। নিহতের বাবা কাজল মীর বলেন, তাকে বিদেশ (দুবাই) পাঠানো থেকে শুরু করে দেশে ফিরিয়ে আনা পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকা দিয়েও মেয়ের জীবন বাঁচাতে পারলাম না। এ বিষয়ে গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা খাতুন বলেন, নিহতের শরীরে কোন আঘাতে চিহ্ন না থাকলেও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বাড়ি অপরাদ ও দূর্ণীতি গফরগাঁওয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, শাশুড়ি আটক