আত্রাই বেইলি ব্রিজের বেহাল দশা যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা

112

আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা : মৎস্য ও শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর আত্রাই উপজেলা। এই উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। এই নদীর উপর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে সংযোগ করেছে একটি বেইলি ব্রিজ। কিন্তু একমাত্র এই বেইলি ব্রিজের স্টিলের পাটাতনে জং ধরে বিভিন্ন জায়গায় ফুটো হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় তা দিন দিন যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। জানা গেছে, প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে হাজার হাজার পথচারীসহ ছোট-বড় যানবাহনকে। এ অবস্থায় যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সচেতন কোন একজন পথচারীদের সতর্ক করতে সেই ফুটোতে কাঠ রেখে দিয়েছিলেন। তারপরও সেতু পারাপারে অসাবধানতা বসত মোটরসাইকেল/ গাড়ি উঠে সেই স্থানে ফাঁকা হয়ে গেছে। এছাড়া ব্রিজের বেশিরভাগ পাটাতন নরবরে হয়ে গেছে। এটি পাড়াপাড়ে বুক কাঁপে পথচারীদের। সতর্কভাবে যানবাহন এবং লোকজন কোনোমতে সেতু পারাপার হন। এটি আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে নদীর দক্ষিণ পারের সংযোগকারী একমাত্র ধবেইলি ব্রিজ। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন এবং মানুষের যাতায়াতের এই বেইলি ব্রিজটি দিনের পর দিন এমন দৈন্যদশায় থাকলেও এটি মেরামতে কোনো উদ্যোগই নেয়নি কর্তৃপক্ষ। আত্রাই সেতুর কাজ প্রক্রিয়াধীন থাকায় বেইলী ব্রীজের জন্য কতৃপক্ষের কোন নজর নেই। আরও জানা যায়, ১৯৯৫ সালে তৎকালীন সরকার রেলওয়ের পুরোনো পিলারের উপর এ ব্রিজটি নির্মাণ করেন। ব্রিজ নির্মাণের পর হতে নদীর উভয় পাশের মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। তারপর হতে আত্রাই নদীর উপর দিয়ে পার্শ্ববর্তী নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া এবং রাজশাহী জেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার মেলবন্ধন হয়। সংস্কারের অভাবে ব্রিজটির বেশিরভাগ স্থানের স্টিলের পাটাতনের লোহায় জং ধরে জোড়ার মুখ ফাঁকা অবস্থায় জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। মাঝে মাঝে পাটাতন ফুটো হয়ে থাকায় সেই ফুটোতে পড়ে কেউ যেন আহত না হন সে জন্য কোনো সচেতন ব্যক্তি কাঠ রেখেছিলেন। এ সেতু পারাপারে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যানবাহন এবং এলাকাবাসী। পথচারী শহীদ ইসলাম, আব্দুল কাদের,নুরুননাহার,মো.খালেকসহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমন জনগুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন জরুরি পদক্ষেপ নেই। প্রতিনিয়ত এ ব্রিজ দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন এবং মানুষ যাতায়াত করেন আর এই ব্রিজে উঠে ভয়ে থাকতে হয় কখন পা গর্তে পড়ে যায়। এই ব্রিজের পাটাতন অনেক দিন থেকেই ভাঙা থাকায় যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই হোঁচট খেতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটি বেহাল হলেও কেউ তা মেরামত করছে না। আর রাতের বেলায় ব্রিজে কোনো সড়কবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পরই ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকিপূর্ন স্থানগুলো নতুন করে সংস্কার করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া এই সমস্যা আর বেশিদিন থাকবে না। কারন এই বেইলি ব্রিজের পশ্চিম পাশ দিয়ে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের কাজ অনেকটাই শেষের দিকে। ব্রিজটি নির্মাণ হলে তখন আর এই বেইলি ব্রিজ ব্যবহার করতে হবে না।