রায়হান আহমেদ তপাদার: জি-২০ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইন্দোনেশিয়ার বালিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বসেন দুই নেতা। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটিই শি'র সঙ্গে তাঁর প্রথম বৈঠক। এর আগে ওবামা প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি শি'র সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছিলেন। তবে ওই বৈঠকের পর অনেক সময় গড়িয়ে গেছে। ২০২১ সালের প্রথম ভাগে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বাইডেন ফোনে অথবা ভিডিও কলে পাঁচ দফা বৈঠক করেছেন। তাঁদের মধ্যে শেষবারের মতো সামনাসামনি দেখা হয়েছে ২০১৫ সালে। সে সময়ে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কিন্তু চীনের নেতার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা বাইডেন শুরু করেছিলেন চার বছর আগে বেইজিং সফরে গিয়ে। এর পর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে অবনতি হয়েছে। তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে সেটা তলানিতে গিয়ে ঠেকে। অতি সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অগ্রসর প্রযুক্তির সেমিকন্ডাক্টর পণ্য চীনে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তাতে সম্পর্কও আরও অবনতি হয়। গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০২৩ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। সি চিন পিংয়ের শূন্য কোভিড নীতির অভিঘাতে চীনের অর্থনীতি এমনিতেই ধুঁকছিল। সে সময়ে সেমিকন্ডাক্টর পণ্যে নিষেধাজ্ঞা চীনের জন্য বড় একটি ধাক্কা।পশ্চিমের প্রতি একই ধরনের অবিশ্বাসের মনোভাব গত কয়েক বছর পুতিন ও সি চিনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছিল। পারমাণবিক বোমা হামলার হুমকি এবং দীর্ঘস্থায়ী ইউক্রেন সংঘাতের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অভিঘাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন সি চিন। বাইডেন বলেছেন, সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে দুই দিনের জি-২০ সম্মেলনের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুহূর্ত হয়ে থাকবে এ বিষয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন না আসায় ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সবচেয়ে বড় শিরোনাম হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যকার মুখোমুখি বৈঠক। দুই শীর্ষ নেতার এ বৈঠক থেকে যৌথ কোনো ইশতেহার আসবে, তেমনটা আশা করা ঠিক নয়। অপ্রত্যাশিত হলেও দুই নেতা দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধানের জন্য যৌথ কর্মসম্পাদন দল গঠনে একমত হয়েছেন। এ ছাড়া তাইওয়ান থেকে শুরু করে মানবাধিকার, বাণিজ্য ও প্রযুক্তি বিনিময় বিষয়েও তাঁরা আলোচনা করেছেন। বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছেন, সর্বোচ্চ স্তরের আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘দুই দেশের মন্ত্রিসভার যথাযথ সদস্যরা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যরা একসঙ্গে বসেছেন এবং যেসব ইস্যু উঠেছে, সেগুলোর প্রতিটি নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সেখানে আমরা অনেক বিষয় তুলেছি। সুনির্দিষ্ট করে না বললেও উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে বাইডেন বলেছেন, চীনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের একটা দল ও পেন্টাগন কোরীয় উপদ্বীপের উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করবে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তিনি তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্টনি ব্লিঙ্কেনকে কিছুদিনের মধ্যে বেইজিং পাঠাবেন। দুই দেশের মধ্যেকার যোগাযোগের পথ খুলতে এবং বিশেষ করে তাইওয়ানের অনতিক্রম্য এলাকা বলতে বাইডেন কী বলতে চেয়েছেন, সেটা স্পষ্ট করতেই ব্লিঙ্কেন চীনে যাবেন। সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, আমরা জোর প্রতিযোগিতা করব, সেটা ঠিক, কিন্তু আমরা সংঘাতে জড়াব না। আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার পথ খুঁজছি। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান নাজুক হওয়া সত্ত্বেও মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিস্ময়কর রকম ভালো ফল করেছে দলটি। নির্বাচনের পর চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বাইডেনকে বেশ বলিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গেছে। চীনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বাইডেন সম্পর্কে বলেছেন, গভীর, অকপট ও গঠনমূলক। বাইডেন বলেন, আমরা আমাদের এই বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেছি যে পারমাণবিক বোমার হুমকি ও এর ব্যবহার পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। রাশিয়ার কাছ থেকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর খেরসন পুনর্দখল নিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাইডেন বলেন, এটা একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিজয়। ইউক্রেনের জনগণ ও সেনাবাহিনীর দৃঢ়তাকে হাতখুলে প্রশংসা করা ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না। এটা চমৎকার একটা ঘটনা।প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, আমরা ভয়ানক বিরোধপূর্ণ অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। এসব বিষয়ে তিনি ছিলেন আগের মতোই অকপট। বৈঠকে নিজের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমি যা বলতে চেয়েছি, তা স্পষ্ট করে বলেছি এবং আমি যা বুঝেছি তা বলেছি। চীনের সঙ্গে নতুন স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা বাতিল করে দেন বাইডেন। গত আগস্ট মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বিতর্কিত সফরের পর তাইওয়ান উপদ্বীপ ঘিরে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সেনা সমাবেশ অনেক বেড়েছে। তা সত্ত্বেও বাইডেন বলেন, তাঁর বিশ্বাস নেই যে চীন খুব শিগগির তাইওয়ানে আগ্রাসন চালাতে পারে। বাইডেন আরও বলেন, আমাদের আগের এক চীন নীতিতে বদল হয়নি। তাইওয়ানের মর্যাদা একতরফাভাবে বদলের বিরোধিতা আমরা করি। তাইওয়ান প্রণালির শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমি এ ব্যাপারে আশ্বস্ত যে তাঁকে (সি চিন) ঠিক যেটা বলতে চেয়েছি, তিনি সেটা বুঝতে পেরেছেন। তিনি কী বলতে চেয়েছেন, সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে বাইডেন বলেছেন, অনির্ভরযোগ্য স্বৈরাচার কিম জং-উনকে চীন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নয়। এরপরও তিনি সি চিন পিংকে বলেছেন, পিয়ংইয়ং যাতে পারমাণবিক বোমা ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা থেকে বিরত থাকে সেটা দেখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে চীনের।বাইডেন বলেন, আমি এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি হয় এমন কোনো কাজে উত্তর কোরিয়াকে ইন্ধন দেবে না চীন। তবে বাইডেন সতর্ক করে দেন যে উত্তর কোরিয়া ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের প্ররোচনামূলক কাজ অব্যাহত রাখে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। বাইডেন তাঁর বক্তব্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ চীনকে লক্ষ্য করে নয়, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে স্পষ্ট একটা বার্তা। জি-২০ সম্মেলনে পুতিন যে আসবেন না, সেটা অনেক আগে থেকেই জানা ছিল। এ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বড় ধরনের ভূরাজনৈতিক পরাজয়ের মুখে পড়ায় এ সম্মেলন থেকে বৈশ্বিক খাদ্য ও জ্বালানিসংকট মোকাবিলার কোনো পথ বের করার প্রচেষ্টা অনেকটাই ফিকে হয়ে আসতে পারে। এর আগে জুলাই মাসে জি-২০-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে পশ্চিমা দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গম ও অন্যান্য খাদ্যশস্যের সরবরাহশৃঙ্খল ভেঙে পড়ার পেছনে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে দায়ী করেছিল। সে কারণে সম্মেলন থেকে লাভরভ বেরিয়ে গিয়েছিলেন। জাতিসংঘ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মহাপরিচালক রিচার্ড গোওয়ান বলেছেন, রাশিয়াকে দোষারোপের সুযোগ হিসাবে জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চকে ব্যবহার করা পশ্চিমা নেতাদের উচিত হবে না। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধে অবশ্যই কিছু যৌথ পথ তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, পশ্চিমা শক্তিগুলো বালি সম্মেলনে যদি রাশিয়াকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে চায়, তাহলে অপশ্চিমা মিত্ররা তাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, জি-২০ সম্মেলনে সবচেয়ে গঠনমূলক অর্জন হবে যদি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শস্য চুক্তিটি নবায়ন করা যায়। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্বকে রক্ষায় সবার সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন। জি-২০ কে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে হবে। আমাদের বিশ্বকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা ঠিক হবে না। আমরা আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পথে হাঁটতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রাজিল, ভারত, সৌদি আরব ও জার্মানির মতো দেশ জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। সম্মেলন শুরুর আগেই বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এ বৈঠকে মতপার্থক্য থাকলেও দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার কথা বলেছেন দুই নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় তৎকালীন বিশ্বনেতৃত্ব শান্তির পথে প্রত্যাবর্তনে প্রচণ্ডভাবে এগিয়ে এসেছিলেন। আজ সেই দায়িত্ব চেপেছে বিশ্বের নেতাদের ওপর। পৃথিবীকে শান্ত, সমৃদ্ধিশালী ও নিরাপদ করে তুলতে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। এটাই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ইউক্রেনের সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড মহামারির বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এখন বিশ্বের মানুষ। এসব সঙ্কটের ফলে গোটা বিশ্বে এখন সরবরাহব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। চারদিকে হাহাকার। প্রতিটি দেশের দরিদ্রদের অবস্থা দুর্বিষহ। দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করা তাদের কাছে কঠিন হয়ে উঠেছে। বলতে দ্বিধা নেই, জাতিসংঘের মতো বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠান এই সংকটের মোকাবিলায় ব্যর্থ। অন্যদিকে, চীনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবর দেখে মনে হয়েছে, বৈঠকটি তাদের কাছে অতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সেখানে বাইডেনের সঙ্গে শি'র বৈঠকের খবরের পাশাপাশি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শি'র বৈঠকও বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। তাদের এমন অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে,এ আয়োজনের জন্য বাইডেনেরই গরজ বেশি ছিল। তিনি তাইওয়ান সম্পর্কে চীনকে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন। বাইডেন বলেছেন, তিনি এ নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো সংঘাত চান না। আসলে বাইডেনের উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন প্রশ্নে চীনকে রাশিয়ার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া। তিনি জানেন, রাশিয়া ও চীন একসঙ্গে থাকলে তাঁর পক্ষে বিশ্বব্যাপী মার্কিন খবরদারি অব্যাহত রাখা একটু কঠিন হবে। তা ছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়াকে পুরোপুরি পর্যুদস্ত করা যে সম্ভর নয়-তাও তিনি ভালোভাবে বোঝেন। এ পরিস্থিতিতে নিজের দেশের অর্থনীতির প্রায় বারোটা বাজিয়ে এবং জনগণকে চরম কষ্টে ফেলে তিনি যেভাবে ইউক্রেনকে অকাতরে সহায়তা করে চলেছেন, তার ভবিষ্যৎ ফল নিয়েও চিন্তিত তিনি। তাই যে কোনো উপায়ে চীনকে রাশিয়ার কাছ থেকে আলাদা করতে চান বাইডেন। কিন্তু আপাতত তাঁর সে মিশন ব্যর্থ-এটি স্পষ্টভাবেই বলা যায়। ১৯৬০-এর দশকে কিউবায় সোভিয়েত ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন নিয়ে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি যে ধরনের অস্তিত্বের হুমকি অনুভব করছিলেন; পুতিন আজকে ওই একই হুমকির সন্মুখীন। আবার চীনও কি জানে না, আজকে রাশিয়াকে কাবু করার পর আগামী দিনে ওয়াশিংটন তাকেই ধরবে? সম্ভবত এ কারণেই শি ইউক্রেনে রাশিয়ার পারমাণবিক হামলার হুমকির নিন্দা করলেও বাইডেনের সঙ্গে মিলে আর কোনো বিষয়ে রাশিয়ার সমালোচনায় রাজি হননি। চীন কিন্তু এক অর্থে ইউক্রেনে রুশ হামলাকে সমর্থনই দিয়েছে, যদিও দেশটি প্রায়ই তার ওয়েস্টফালিয়ান নীতির কথা বলে, যার আওতায় চীন যে কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী। লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক