বিধান চন্দ্র ঘোষ দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি: শীতের শুরুতেই প্রতি বছরের মতো এবারও খুলনার দাকোপের বিভিন্ন অঞ্চলের খাল বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখি। পাখির কলকাকলীতে এঅঞ্চলের ছোট ছোট বিল ঝিলগুলো হয়ে উঠছে মুখরিত। পাখির কিচির মিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তুলছে আরও প্রানবন্ধব। কিন্তু স্থানীয় পেশাদার অসাধু শিকারীরা নকল ডাকের ফাঁদে ফেলে নানা কৌশলে অবাধে শিকার করে চলেছে আসল অতিথি পাখি। অগ্রিম অডার নেয়া খরিদ্দারদের কাছে এসব পাখি আবার বিক্রিও করছে শিকারীরা।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, প্রচন্ড শীতের প্রকোপ থেকে আত্মরক্ষার্থে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে অতিথি পাখি এঅঞ্চলে আসে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালী কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদা খোচা, ডংকুর, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। জানা গেছে ৮০ দশকে এদেশে আসা অতিথি পাখির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩০০ প্রজাতির। কিন্তু বর্তমানে এ সংখ্যা নেমে ৬০ থেকে ৭০ চলে এসেছে। স্থানীয় পেশাদার এসব শিকারীরা আইনের তোয়াক্কা না করে মেতে উঠেছে পাখি নিধনে। তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের খাল, বিল, নদী ও মাঠ থেকে নাইলনের সুতার তৈরি ফাঁদে ও চোখে আলো ফেলে, কেঁচো দিয়ে বশি পেতে, কোচ মেরে ও কারেট জাল পেতে এসব পাখি শিকার করছে। উপজেলা প্রশাসন বিগত কয়েক দিন আগে সুতারখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের দুইজনকে ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিলেও থেমে নেই পাখি শিকার। প্রশাসন আরো তৎপর হলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এসব পাখি শিকার বন্দো হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিকারীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, প্রতি রাতে ধান ক্ষেতে বসে পাখির ডাকের সাথে নকল সুর মিলানো বাঁশি অথবা মোবাইল ফোনে রেকর্ড বাজিয়ে আসল উড়ন্ত পাখিদের নিচে নামিয়ে ফাঁদে ফেলে অতি সহজে শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেওয়া খরিদ্দারদের কাছে প্রতি পাখি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রিও করছে শিকারীরা।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বঙ্কিম কুমার হালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে হবে। আমার তো ম্যাজিষ্ট্রেট ক্ষমতা নেই। আমি কিভাবে পাখি শিকার বন্দো করবো।